পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৩

 আমার দেশ

২৫ অক্টোবর মন্ত্রিসভার মেয়াদ শেষ : অর্থমন্ত্রী। দুই নৌকায় পা দিলে সবকিছু হারাতে হবে : তোফায়েল। সরকারের নীতিতে আমও যাবে ছালাও যাচ্ছে : মেনন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
« আগের সংবাদ পরের সংবাদ»
আগামী ২৫ অক্টোবর বর্তমান মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়ার পরবর্তী তিন মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তখন সরকার অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করবেন। প্রধানমন্ত্রী হয় আগের মন্ত্রিসভা নিয়েই সরকার পরিচালনা করবেন, অথবা নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। গতকাল রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করলেও সংসদের মেয়াদ থাকবে আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সংসদ বহাল থাকছে। সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো প্রয়োজন হবে না।
বাজেট প্রণয়ন নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডাকা হলেও এতে রাজনৈতিক আলোচনা প্রাধান্য পায়। সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেন। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), টেস্ট রিলিফ (টিআর) কর্মসূচির নামে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ সম্পদ রাজনৈতিক নেতারা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে বৈঠকে অভিযোগ ওঠে। সংসদ সদস্যরা দুর্নীতিগ্রস্ত এসব কর্মসূচি দ্রুত বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে রাব্বি মিয়া, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যে উঠে আসে রাজনৈতিক অস্থিরতা।
অনুষ্ঠানে সরকারের উদ্দেশে রাশেদ খান মেনন বলেন, আপনারা একদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন, অন্যদিকে ধর্মদ্রোহিতার জন্য ব্লাসফেমি আইন নিয়ে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে যেসব কথা বলেছেন, এতে আমি আতঙ্কিত। তার কথায় মনে হয়েছে, আমরা বাংলাদেশকে ‘ইসলামাইজেশনে’র দিকে ঠেলে দিচ্ছি। এতে দেশ কোথায় গিয়ে পৌঁছবে। এর ফলে আমাদের আমও যাবে, ছালাও যাচ্ছে বলে আমার ধারণা।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে দ্বিমুখী নীতি বাদ দিন। দুই নৌকায় পা দিলে চারদিকই হারাতে হবে। লক্ষ্য ঠিক করে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। আমরা লক্ষ্য ঠিক করতে পারছি না। শেষমেশ আমরা দু’কূলই হারাব।
বৈঠকে টিআর, কাবিখা কর্মসূচির নামে ব্যাপক লুটপাটের সমালোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। তারা বলেন, টিআর, কাবিখা থেকে কোনো সুফল আসছে না। এক-দুই কেজি চালে কারও কোনো লাভ হয় না। প্রতি টন চাল ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে যায় সিন্ডিকেট। ফলে রাজনীতিবিদদের ইমেজ নষ্ট হয়। এটা একটা খারাপ দৃষ্টান্ত।
তোফায়েল আরও বলেন, অর্থমন্ত্রীর নিজের এলাকায়ও টিআর, কাবিখা বরাদ্দ রয়েছে। ওই এলাকায় মসজিদের নামে এক লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও কোনো মসজিদ ১০ হাজার টাকার বেশি পায়নি। দালালরা সব টাকা লুটে নিয়েছে।
জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো খাতে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। জনসাধারণকে আর মিথ্যা আশ্বাস দিতে চাই না। টাকার অভাবে আমরা কাজ করতে পারছি না। পল্লী অবকাঠামো খাতে তিনি অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন